বই-অন্ধকারের গান লেখক-হুমায়ূন আহমেদ ধরন-উপন্যাস পৃষ্ঠা-৯৬ মূল্য-১২৫ অনন্যা প্রকাশনা ... তিনি প্রশ্ন করিলেন,আলোর জন্ম কোথায়? দেবদূত উত্তর করিলেন,আলোর জন্ম অন্ধকারে। তিনি দ্বিতীয় প্রশ্ন করিলেন, অন্ধকারের জন্ম কোথায়? দেবদূত ক্ষণকাল নীরব থাকিয়া কহিলেন, আমি জানি না। আপনার কি জানিতে ইচ্ছা করে না? দেবদূত কহিলেন, না এই প্রশ্নের উত্তর জানিতে আমি ইচ্ছা করি না। কিন্তু আমার জানতে ইচ্ছা করে । সত্যিই আমার জানতে ইচ্ছা করে। অন্ধকার এর সৃষ্টি কিভাবে..? হুমায়ুন আহমেদ এর অন্যতম উপন্যাস হল "অন্ধকারের গান"। নামেই কেমন জানি গুমোট গুমোট ভাব। তবে এটা ঠিক নামের সাথে উপন্যাসের মিল অনেক। কিন্তু করলা তিতা জেনেও অনেকে আছেন আমার মতো, যারা খুব তৃপ্ত সহকারে ভাত খেতে পারেন। তেমনি এই বই পড়ার পর মন টা খারাপ হয়ে যাবে জেনেও পাঠক এর অভাব হবে না। আরো সহজ করে বললে, কাহিনী টা পুরো বুঝে ফেলার পরও আপনার ইচ্ছা হবে আরও কয়েক বার বই টা উল্টানোর। সমাজে কয়েক প্রকার মানুষ থাকে কেউ বীণার বাবার মতো , যারা অভাব এর থৈ খুজে পান না। আবার থাকে গণি সাহেবের মতো, যারা টাকা খরচ করার জায়গা পায় না। বীণারা থাকে একটা পুরানো আমলের হিন্দু বাড়িতে । তুলসী মঞ্চ আছে, ছোট একটা ঠাকুরঘর আছে। এর দক্ষিনে আছে একটা কুয়া। এটা বীণার বাবা মিজান সাহেব , নিত্যরঞ্জন বাবুর থেকে কিনেছেন জলের দামে। কিন্তু দখল নিতে অনেক কাঠখড় পুড়াতে হয়েছিলো। বীণা, বুলু, বাবলু, আর লীনা চার ভাই বোন সব সময় তটস্থ থাকে বাবার ভয়ে। বুলু আর বীণার বি এ রেজাল্ট হয়েছে। বুলু আগের দুইবারের মতো এবারো ফেল করেছে। অথচ বীণা বেশ ভালো রেজাল্ট করেছে। বুলুর ফেল করার চাপটা পরিবারের সবার উপর আসবে বলে বীণা ভয় পাচ্ছে। বীণা জানে বুলু অনেক চেষ্টা করেছে। তবুও সে পারে নি।আর তাই বাবার ভয়ে সে বাড়ি থেকে পালিয়েছে। বীণার দাদা দাদীও ছিলেন বীণাদের সাথে। গ্রাম থেকে আসায় এখানে থাকতে তাদের খুব কষ্ট হচ্ছিলো। বীণার বান্ধবী অলিক । বীণার সাথে বেশ কৌতুক করেই অলিকের বন্ধুত্ব হয়েছিল। অলিক এর মা মারা গেছেন কিছু দিন আগে। অলিক ভাবে সেও খুব তাড়াতাড়িই মারা যাবে। কেন না তার মায়ের অসুখ টা তার ও হয়েছে বোধহয়। আর একটি চরিত্র হলো, ওসমান গনি ।তিনি মেঘনা এন্টারপ্রাইজের মালিক। কোন নির্দিষ্ট নায়ক বা নায়িকা নেই উপন্যাসে। তবে সব গুলো চরিত্র সক্রিয়। অন্ধকারের একটা ছায়া পুরো উপন্যাস জুড়ে। তবুও আমার বেশ ভালো লেগেছে। মাঝে মাঝে ইচ্ছা করেই কিছু কষ্ট পেতে ভালো লাগে। মনে হয় এখন কিছু কষ্ট আমার পাওয়া উচিৎ। তাহলে বোধ হয় , ভেতর টা হালকা লাগবে। সেই সময়টায় আমার এই বই টা খুব দরকারি মনে হয়। ভালো লাগে বীণা কে, বুলু কে এমন কি শেষ দিকে ভালো লাগে তার বাবাকেও।
Saturday, November 19, 2011
Andhokarer gaan by Humayun Ahmed (অন্ধকারে গান)
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment