Payer Tolay Khrom By Humayun Ahmed (ই আলোচনা "পায়ের তলায় খড়ম" - হুমায়ূন আহমেদ) - Free Bangla Books Download Now

Wednesday, September 14, 2011

Payer Tolay Khrom By Humayun Ahmed (ই আলোচনা "পায়ের তলায় খড়ম" - হুমায়ূন আহমেদ)

amarboi.com


মেয়েটির বয়স সাড়ে সাত বছর।তার গায়ে টকটকে লাল রঙের ফ্রক।মাথার চুলে লাল রিবন।হাতে লাল রঙের ছোট্ট হ্যান্ডব্যাগ।মেয়েটি ঢাকা এয়ারপোর্টের লাউঞ্জে দাড়িয়ে ব্যাকুল হয়ে কাঁদছে।একটু দূরে তার বাবা- মা ।এই দুজনও মেয়ের কান্না দেখে চোখ মুছছেন। 
মেয়েটি সবাইকে ছেড়ে একা একা যাচ্ছে ইস্তাম্বুল।কামাল আতাতুর্কের জন্মদিনে সারা বিশ্বের শিশুরা নাচগান করবে।মেয়েটি বাংলাদেশের প্রতিনিধি। 
বালিকার কান্না দেখে এক পর্যায়ে তার মা বললেন,আমার মেয়ে যাবে না।আমি তাকে ছাড়ব না। 

শেষ মুহূর্তে এই ধরণের কোন কথা বললে কোন লাভ হয় না।মেয়েটিকে প্লেনে উঠতে হোল।তার বাবা মেয়েটির লাল ব্যাগে দুটা এক শডলারের নোট দিয়ে বললেন,তোমাকে অনেক টাকা দিলাম।তুমি ইচ্ছামতো খরচ করবে। 

মেয়েটি জীবনে প্রথম প্লেনে উঠার উত্তেজনায়, বাবা মা ছেড়ে এত দূরে যাওয়ার দুশ্চিন্তায়, তার লালব্যাগ ফেলে নিঃস্ব অবস্থায় প্লেনে উঠল। 
ইস্তাম্বুলে তাকে থাকতে দেওয়া হলো এক তুর্কি পরিবারের সাথে। সেই পরিবারের সদস্য সংখ্যা চার।বাবা মা,এক ছেলে এবং ভয়ালদর্শন এক বিড়াল। 

তুর্কি পরিবারের মহিলা বললেন তুমি আমাকে ডাকবে আন্নি। তুর্কি ভাষায় আন্নি হলো মা।মহিলা কথা বলছেন ইংরেজিতে।বাচ্চামেয়েটি কিছুই বুঝতে পারছে না।মহিলা নিজের দিকে আঙুলে ইশারা করে বললেন, বলো আন্নি। 

বাচ্চামেয়ে কাঁদো কাঁদো গলায় বলল , আন্নি। 
মহিলা শিশুটিকে কোলে তুলে নিয়ে বললেন, একবার তুমি আমাকে আন্নি ডেকেছ,আমি সারা জীবন তোমার আন্নি হয়ে থাকবো।বাচ্চা মেয়েটির পরিচয় তার নাম মেহের আফরোজ শাওন 

লেখক তার অনেক বছর পর সেই শিশুটিকে বিয়ে করলেন।শিশুটি ততদিনে অত্যন্ত রুপবতি এক তরুনি।সেই তরুণীটিকে নিয়ে লেখক বিভিন্ন দেশে যান , লেখকের ইচ্ছা হয় তার তরুণী স্ত্রীকে না জানিয়ে সেই আন্নির পরিচয় বের করে তাকে নিয়ে ইস্তাম্বুলে সেই আন্নির বাড়িতে হাজির হন।কারণ তিনি সারপ্রাইজ দিতে পছন্দ করেন।

লেখক অনেক কষ্ট করে সেই আন্নির পরিচয় বের করে একদিন ইস্তাম্বুলের সেই আন্নির বাড়িতে হাজির হন।গিয়ে দেখেন আন্নি মরে গেছে , তার ছেলে লেখকের স্ত্রী শাওন কে চিনতে পারে।লেখক দেখলেন আন্নির ঘরের ছবি রাখার এক জায়গায় আন্নি ও তার ছোট্ট শিশু বধূর ছবি টাঙ্গানো।সেই আন্নির ছেলে তাদের কে (লেখক তার স্ত্রী ও পুত্র দ্বয়) হোটেল থেকে জোর করে তাদের বাসায় নিয়ে আসে।শুরু হয় আন্নির ছেলের ভালবাসার উৎপাত।

সেই আন্নির ছেলে তাদের গাইড হয়ে তাদের নিয়ে যায় তুরস্কের বিখ্যাত তোপকাপি মিউজিয়ামে।যেখানে নবীজির ও তার পরিবারের সহ বিভিন্ন নবিদের ব্যবহার করা জিনিস রাখা আছে।লেখক প্রথমে দেখলেন নবী মুসার লাঠি।এত হাজার বছর আগের লাঠি এখনো কিভাবে এত অবিকৃত এটা লেখকের মনে প্রশ্ন জাগে।লেখক এর পড়ে দেখলেন ইউসুফ নবির পাগড়ি।লেখক তার স্ত্রীর কানে কানে বললেন , ইউসুফ নবির পাগড়ি এখনো নতুনের মতো।

এরপর লেখক দেখলেন আমাদের শেষ নবির পায়ের ছাপ।লেখক এই সম্পর্কে অতি গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা লিখেছেন পদচিহ্ন বিষয়ে আমার কিছু কথা আছে।নবীজির পায়ের ছাপ পৃথিবীর বেশ কিছু বড় বড় মিউজিয়ামে আছে।এই মুহূর্তে কায়রোর মিউজিয়ামের একটির কথা মনে পড়ছে।সমস্যা হচ্ছে,পদচিহ্নের একটির সঙ্গে আরেকটির মিল নেই।তাহলে সমস্যা কোথায়

যাই হোক বইয়ের এরপরের কিছু অধ্যায়ে লেখকের আমেরিকা ভ্রমনের ঘটনা বর্ণিত।এই বইয়ের ই একটা অধ্যায়ে আমরা শংকু নামে একটা লোকের পরিচয় পাই।তার পুরা নাম শংকু আইচ, সে জাদুকর জুয়েল আইচের ছোট ভাই।

অদ্ভুত মানুষ এই শংকু , যেন লেখকের কোন উপন্যাসের চরিত্র।এই শংকুর বাড়িতে অনেক বিখ্যাত মানুষ ই আতিথ্য গ্রহন করেছেন।এদের একজন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়।লেখকের মতে জুয়েল আইচের মত অতি ভালো মানুষকে পাঁচ দিয়ে গুন করলে যা পাওয়া যায় তার নাম শংকু।

যাই হোক পুরো বইটি পড়ে মজা পেয়েছি।লেখক যদি অখ্যাত কেউ হতেন তাহলে বলতাম , আপনারা বইটি পড়ে দেখবেন , আশা করছি বইটি শীঘ্রই পাঠক প্রিয়তা পাবে।যেহেতু লেখক সাহিত্তের রাজপুত্র এবং বেশ বিখ্যাত তাই আর বলছি না।তার বই কেনার জন্য তার নাম ই যথেষ্ট । 
ডাউনলোড করার জন্য ক্লিক করুন



No comments:

Post a Comment