হিমুকে যিনি ডাকছেন তিনি মধ্যবয়স্কা এক জন মহিলা। চোখে সোনালি ফ্রেমের চশমা। তাঁর সঙ্গে হিমুর একটি ব্যাপারে মিল আছে। তিনিও পান খাচ্ছেন। ===”আমি বললাম, আমাকে কিছু বলছেন?/তোমার নাম কি টুটুল?”হিমু জবাব না দিয়ে কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো। এই মহিলাকে সে আগে কখনো দেখে নি। অথচ তিনি এমন আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছেন যেন সে যদি বলে ‘হ্যাঁ আমার নাম টুটুল’ তাহলে ছুটে এসে আমার হাত ধরবেন।===কথা বলছ না কেন? তোমার নাম কি টুটুল? হিমুর হাসলো। হাসলো এই আশায়ে যেন তিনি ধরতে পারেন সে টুটুল না। হাসিতে খুব সহজেই মানুষকে চেনা যায়। সব মানুষ একই ভঙ্গিতে কাঁদে, কিন্তু হাসার সময় একেক জন একেক রকম করে হাসে। হিমুর হাসি নিশ্চয়ই ঐ টুটুলের হাসির মত না। আশ্চর্যের ব্যাপার এই ভদ্রমহিলা হাসিতে আরো প্রতারিত হলেন।===” চোখমুখ উজ্জ্বল করে বললেল, ওমা টুটুলই তো। ভাবছিলাম তিনি আমার দিকে ছুটে আসবেন, তা না করে ছুটে গেলেন রাস্তার ওপাশে পার্ক-করা গাড়ির দিকে। আমি শুনলাম তিনি বলছেন, তোকে বলি নি ও টুটুল! তুই তো বিশ্বাস করলি না। ওর হাঁটা দেখেই আমি ধরে ফেলেছি। কেমন দুলে দুলে হাঁটছে।” === অতঃপর গাড়িতে উঠে বসা এবং বিপদ===ভদ্রমহিলার পাশে বসে-থাকা মেয়েটি বলল, মা, এ টুটুল ভাই নয়।/আমি ঘাড় ঘুরিয়ে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে ঠিক আগের ভঙ্গিতে হাসলাম। যে হাসি দিয়ে মেয়ের মাকে প্রতারিত করেছিলাম, সেই হাসিতে মেয়েটিকে প্রতারিত করার চেষ্টা। মেয়ে প্রতারিত হলো না। এই যুগের মেয়েদের প্রতারিত করা খুব কঠিন। মেয়েটি দ্বিতীয় বার আগের চেয়েও কঠিন গলায় বলল, মা, তুমি কাকে তুলছ? এ টুটুল ভাই নয়। হতেই পারে না। অ অন্য কেউ।/মেয়ের মা বললেন, আচ্ছা তুমি টুটুল না?/না।/মেয়েটি কঠিন গলায় বলল, তাহলে টুটুল সেজে গাড়িতে উঠে বসলেন যে?” ===জাস্টিস সাহেবের স্ত্রী আর মেয়ের সাথে ইচ্ছাকৃত জটিলতার কারণে থানায় যাওয়া এবং অতঃপর স্বভাবসুলভ বিভ্রান্তিমূলক কাজকর্ম শুরু করা। গল্পের শুরু এভাবেই..........
Monday, July 9, 2018
Moyurakkhi by Humayun Ahmed (ময়ূরাক্ষী হুমায়ূন আহমেদ)
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment