Ekjon Himu Koekti Jhin Jhin Poka By Humayun Ahmed (একজন হিমু কয়েকটি ঝিঁঝিঁ পোকা হুমায়ূন আহমেদ) - Free Bangla Books Download Now

Monday, July 9, 2018

Ekjon Himu Koekti Jhin Jhin Poka By Humayun Ahmed (একজন হিমু কয়েকটি ঝিঁঝিঁ পোকা হুমায়ূন আহমেদ)

ভূমিকা
হিমু কখনো জটিল পরিস্থিতিতে পড়ে না। ছোটখাট ঝামেলায় সে পড়ে। সেই সব ঝামেলা তাকে স্পর্শও করে না। সে অনেকটা হাঁসের মত। ঝাড়া দিল গা থেকে ঝামেলা পানির মত ঝরে পড়ল।
আমার খুব দেখার শখ বড় রকমের ঝামেলায় পড়লে সে কী করে। কাজেই হিমুর জন্যে বড় ধরনের একটা সমস্যা আমি তৈরি করেছি। এবং খুব আগ্রহ নিয়ে তার কাণ্ড–কারখানা দেখছি।
হুমায়ূন আহমেদ
নুহাশপল্লী, গাজীপুর।

আমার চেহারায় খুব সম্ভবত I am at your Service জাতীয় ব্যাপার আছে। আমি লক্ষ করেছি প্রায় সব বয়েসী মেয়েরা আমাকে দেখলেই টুকটাক কিছু কাজ করিয়ে নেয়। তার জন্যে সামান্য অস্বস্তিও বোধ করে না।
নিতান্ত অপরিচিত মহিলা নির্বিকার ভঙ্গিতে আমাকে বলবে–এই ছেলে, এই হলুদ পাঞ্জাবি, একটা রিকশা খুঁজে দাও তো। রিকশা না পেলে বেবিটেক্সি। মালীবাগ যাব। ভাড়া ঠিক করে এনো। কেয়ক
এই ধরনের কাজ আমি আগ্রহের সঙ্গে করি। দরদাম করে রিকশা ঠিক করি, জিনিসপত্র তুলে দেই। খট করে রিকশার হুড তুলি। এবং শেষপর্যায়ে প্রিয়জনদের উপদেশ দেবার মতো সামান্য উপদেশ দেই–শাড়ি টেনে বসুন। চাকার সঙ্গে পেঁচিয়ে যেতে পারে। হ্যাঁ এইবার হয়েছে।
শেষ উপদেশ রিকশাওয়ালাকে, রিকশা দেখেশুনে যাবে। No ঝাঁকুনি।
হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে কেউ যদি দেখে তার পাশে এমন একজন লোক বসে আছে যার চেহারা তক্ষকের মত, এবং সে ক্রমাগত মুখ নাড়ছে। কিন্তু মুখ থেকে কোনো শব্দ বের হচ্ছে না। তখন কী করা উচিত? লাফ দিয়ে উঠে বসে–কে কে বলে চিৎকার করা উচিত, না-কি প্রাথমিক ধাক্কাটা সামলাবার জন্যে আবার চোখ বন্ধ করে ফেলা উচিত?
আমি লাফ দিয়ে উঠে না বসে চোখ বন্ধ করে ফেললাম। ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি বিবেচনা করা যাক। ঠাণ্ডা মাথায় বিবেচনা করলে হয়ত দেখা যাবে ব্যাপারটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। জগতের অতি স্বাভাবিক ঘটনাগুলিও শুধু পরিস্থিতির কারণে অস্বাভাবিক মনে হয়।
যেহেতু আমার ঘরের দরজা সব সময় খোলা থাকে সেহেতু যে কেউ আমার ঘরে ঢুকতে পারে।
লোকটা চেয়ারে না বসে আমার গা ঘেসে বিছানায় বসে আছে। এরও যুক্তি সঙ্গত কারণ আছে। আমার চেয়ারের একটা পা নড়বড়ে। সে হয়ত চেয়ারে বসতে গিয়ে ভরসা না পেয়ে আমার বিছানায় বসেছে।
নতুন জামা উপহার পেলে জামা গায়ে দিয়ে যিনি উপহার দিয়েছেন তাকে সালাম করতে হয়। নতুন মোবাইল পেলে কী করতে হয়? মোবাইল কানে লাগিয়ে পা ছুয়ে সালাম? অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা। আমি খালার সঙ্গে দেখা করতে গেলাম। ধানমন্ডিতে বাড়ি। এক বিঘা জমির উপর ছিমছাম ধরনের বাড়ি। সামনে বিরাট লন।
পাখির সঙ্গে কি মোবাইল টেলিফোনের কোনো মিল আছে? পাখিরা উড়ে বেড়ায়। মোবাইল টেলিফোনও এক জায়গায় স্থির থাকে না–মানুষের হাতে কিংবা পকেটে ঘুরে বেড়ায়। পাখিরা কিচকিচ শব্দ করে মানুষের ঘুম ভাঙায়। মোবাইল ফোনও তাই করে। এই মুহুর্তে আমার ঘুম ভেঙেছে মোবাইল টেলিফোনের শব্দে।
আমার কি উচিত মানুষের সব কথা বিশ্বাস করা? তর্কে যাকে পাওয়া যায় না, তাকে পাওয়া যায় বিশ্বাসে। তর্ক হল আগুনের মত। যে-আগুনের কাছে এলে বিশ্বাস বাম্পের মত উবে যায়। মালিহা খালার বাসা থেকে বের হলাম মন খারাপ করে। খালা এবং তার স্বামী দুজনে মিলে আমাকে বোকা বানিয়েছে মন খারাপটা...

No comments:

Post a Comment