হিমুকে কয়েকদিন ধরে গরু খোঁজার মতো খোঁজা হচ্ছে। না তা গরু খুজেঁ দেওয়ার জন্য না। সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু বাদল! কিভাবে যেন মাছ খেতে গিয়ে গলায় কাঁটা বেঁধিয়ে বসে আছে। কয়েকদিন ধরে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ! এমনকি ঢোক পর্যন্ত গিলতে পারছে না। অনেক ডাক্তার দেখানো হয়েছে। কেউ কিছু করতে পারেনি। কিন্তু বাদলের বিশ্বাস এই কাজ হিমু ভাই ছাড়া আর কেউ করতে পারবে না। সেজন্যই হিমুকে গরু খোঁজা খোঁজা হচ্ছে... এক রাতে হাঁটতে হাঁটতে খিদে লাগায় হিমু হাজির হয় মাজেদা খালার বাসায়! সে রাতে খাবার সময় নেমে যায় বাদলের গলার কাঁটা। হিমু হয়ে যায় খালা খালুর প্রিয়পাত্র। সবাই মনে করে আধ্মাত্বিক ক্ষমতার দ্বারা হিমু বাদলের কাঁটা নামিয়ে দিয়েছে। শুধু একজন বাদে... সে হচ্ছে ইরা! ইরা! বাদলদের দূরসম্পর্কের আত্মীয়। সামনে পরীক্ষা তাই বিশেষ একটা কারণে তাকে এখানে থেকে পড়াশোনা করতে ইচ্ছে। ইরা কখনোই হিমুকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেনি! তার মনে হতে থাকে এসব বুজরকি শুধুমাত্র মানুষকে ঠকানোর জন্য। বাদলের কাঁটা নামিয়ে চলে আসার পর ইরার সাথে হিমুর কয়েকবার দেখা হয়! বাদলের সন্ন্যাসব্রত যেন তাদের দেখা করার উপায় ছিলো মাত্র! এ গল্পে হিমু, ইরা, বাদল, মাজেদা খালা, খালু বাদেও আরো কয়েকটি চরিত্র রয়েছে। এরমধ্যে প্রধান দুটি চরিত্র হলো, রেশমা খালা আর বদরুল সাহেব। বদরুল সাহেব এই গল্পের অন্যতম প্রধান চরিত্র। অত্যন্ত দুঃখী অথচ গোবেচারা ধরনের মানুষ নিতান্তই খেয়ালবশত হিমুকে প্রচন্ড পছন্দ করেন... এছাড়া রয়েছেন রেশমা খালা! স্বামীর মৃত্যুর পর যিনি রাতে ঘুমের সময় স্বামীকে প্রতিরাতে বাসায় দেখতে পান এবং এই সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি হিমুকে তার কাছে নিয়ে আসেন! এ গল্পে রেশমা খালা না থাকলে নিঃসন্দেহে গল্পটি সাদামাটা রূপ ধারণ করতো। এবং হিমু বইটি হিমু সিরিজের আমার পড়া অন্যতম সেরা এবং পছন্দনীয় বই। আমার এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার পড়া হয়েছে! এখনও মাঝে মাঝে পড়ি। বিশেষ করে শেষের দিকে ইরা আর হিমুর মধ্যকার কথোপকথন এক ধরনের অন্যরকম শিহরনের জন্ম দেয়। আর রূপা চরিত্রটি... যেন প্রতিটি গল্পেই নিজের মতো! পছন্দনীয় অথচ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য!
No comments:
Post a Comment